শেষ বিকেলের আলো ৩য় পর্ব Shesh Bikeler Alo । হেদায়েতের গল্প

 

শেষ বিকেলের আলো ৩য় পর্ব Shesh Bikeler Alo । হেদায়েতের গল্প

গল্পঃ শেষ বিকেলের আলো

৩য় পর্ব

লেখা: Nilofa Nilo(উম্মে জাবির)

সুমাইয়ার ব্যপারে এসব কথা শুনে নিজেকে খুব বেশি আহত মনে হচ্ছিলো। ফুলের মতো নিস্পাপ একটা মেয়ের জীবনে এত এত পরীক্ষা, না জানি মেয়েটা সহ্য করতে পারছে কি না। আল্লাহ সুমুর সহ্য শক্তি বাড়িয়ে দাও।

মায়ের কাছ থেকে আরো শুনলাম, বাড়ির সবাই সুমুর ডিভোর্স করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে, কিন্তু সুমু কিছুতেই রাজী হচ্ছে না। সে আবার সেই কষ্টের জীবনে ফিরে যেতে চায়!! নিজেকে আবার খুব অপরাধী মনে হচ্ছিলো। কেন একটিবারের জন্যও সুমুর খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করিনি! কেন সুমুকে সামনে পেয়েও একটিবারের জন্যও জানতে চেষ্টা করিনি, সে কেমন আছে! হয়তো সুমু সুখে থাকলে মানবিক হিংসা হতো কিন্তু শান্তি, তৃপ্তি পেতাম!!

কী আজিব মানুষ আমি!! সে হয়তো এক বুক অভিমান নিয়েই ফিরে গিয়েছিলো!

কিন্তু আমার যে করার কিছুই নেই।

সেদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো, আমার সুমু খুব বৃষ্টিতে ভিজতে ভালোবাসতো। না, না সে আমার সুমু নয়। সে এখন অন্য কারো। অনেক কষ্টে যাকে ভুলতে পেরেছি আল্লাহর জন্য, আজ তাকে আবার বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে, বার বার। আমি নিজেকে শত কন্ট্রোলে রাখার চেষ্টা করলেও কিছুতেই নিজের মনকে মানাতে পারছি না যে, সুমু ভালো নেই। তাকে ফিরাতেই হবে। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। শুধু ভেবেছি কী করা যায়?  কী করার আছে?

আবার হাসপাতাল, চেম্বার,  রোগী নিয়ে ব্যস্থ হয়ে গেলাম। সারাদিনে আর সুমুর কথা মনে না পড়লেও, রাতে ঘুমানোর সময় মনের কোণায় সুমুর নিস্পাপ হাসিটা উঁকি দিয়ে যায়। সারাদিনের ক্লান্তিতে ঘুম চলে আসে! এভাবে প্রায় একমাস চলে যায়। মাঝেমাঝে মন খুব আকুপাকু করে, একটু মার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস করি সুমু কেমন আছে? কিন্তু জড়তায়, সংকোচে আর জিজ্ঞাস করা হয় না।

সেদিন খুব জানতে ইচ্ছে হচ্ছিলো, মায়ের সাথে কথার এক পর্যায়ে জিজ্ঞাস করলাম,

--মা, সুমাইয়ার ডিভোর্স হওয়ার কথা ছিলো, কতটুকু এগোলো?

: বলিস না, মেয়েটা পাগলি! ছোট বেলা থেকেই জিদ্দি টাইপের ছিলো এখনো সেই থেকে গিয়েছে? এখন তো মোটামোটি ধর্ম মানে। বলে কি না, ধৈর্য ধরবো! কপালে যা আছে তাই হবে। 

--কিন্তু মা, ইসলামেও তো মনের মিল না হলে ডিভোর্সের কথা লিখা আছে। তাছাড়া অনেক সাহাবিদেরও ডিভোর্স হয়েছিলো। ডিভোর্স যদি শুধু খারাপের হতো তাহলে সাহাবিরা কখনো ডিভোর্স নিতেন না। ধর্ম মানলেই ডিভোর্স নিতে পারবে না এমন তো নয়।

 খানসা বিনতে খিদাম (রা:) এর স্বামী উহুদ যুদ্ধে শহীদ হলেন, তার বাবা তাকে এক ব্যাক্তির নিকট বিয়ে দিয়ে দেন।

তখন হযরত খানসা (রা:), রাসুল (স:) কাছে এসে বললেন, ‘‘আমার পিতা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন; অথচ আমি আমার সন্তানের চাচাকেই অধিক পছন্দ করি।”

[সাহীহ বুখারী,৮ম খন্ড, ৬০৫৪ ও ৬০৫৩]

এরপর আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তার বিয়ে ভেঙ্গে দিলেন।  রাসুল (স:)ই বিয়েটা ভেঙে দিয়েছিলেন।

 হ্যা ধৈর্যের ফল অমূল্য, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। কিন্তু,,

মা আমার কথার মাঝখানেই বললো,

: কিন্তু সেটা তাকে কে বুঝাবে? আহারে! মেয়েটার জন্য খুব কষ্ট হয়, আল্লাহ এইটুকুন বয়সেই তাকে কত বেশি পরিক্ষার সম্মুখীন করেছেন। জীবনে সুখ কী জিনিস দেখেনি। বিয়ের পর থেকে স্বামীর সুখ কী জিনিস তো মেয়েটি বুঝে উঠতে পারেনি। অনেক কষ্টে একটা বাচ্চা, তাকেও হারালো।

--মা চিন্তা কর না, নিশ্চয় দুঃখের পর সুখ রয়েছে। দুনিয়াতে না পেলে নিশ্চয় আখিরাতে পাবে ইন শা আল্লাহ।

আমি আবার ভাবনায় পড়ে গেলাম। 

শেষপর্যন্ত সুমুর সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। জানি নিজেকে ঠিক রাখতে পারাটা কঠিন হবে, কিন্তু সুমাইয়া জীবন বাঁচানোও খুব জরুরি।  এতদিন দ্বীন প্রেক্টিসে নিজের মনের উপর এতটুকু বিশ্বাস অর্জন করেছি, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবো ইন শা আল্লাহ। ঠিক যতটুকু কথা  বললে পর্দার হুকুম লঙন হবে না, ততটুকুই বলবো!! সুমাইয়ার নাম্বার নিয়ে কল দিলাম, সালাম বিনিময়ের পর বললাম,

--আমি একটু আপনার সাথে দেখা করতে।চাই! যদি আপনার আপত্তি না থাকে।

: আমার সাথে কথা বলার কী দরকার! 

-- চিনতে পেরেছেন?

: তুমি ভুলে গেলেও আমি আজো ভুলতে পারিনি। বাহ! এখন তাহলে তুমি থেকে আপনিতে চলে আসলেন! আমি এতটাই অপরিচিতা আর পর হয়ে গেলাম! তোমরা পুরুষ মানুষ সব একই।

বুঝতে পারলাম, সুমাইয়া দ্বীনকে এখনো আঁকড়ে ধরতে পারেনি! কিন্তু মায়ের কাছে শুনেছি সুমু দ্বীনের ব্যপারে যথেষ্ট কিছু শিখেছে, জেনেছে। তাহলে গায়রে মহরামের হুকুমের ব্যপারেও জানার কথা!

তবে হ্যাঁ দ্বীন সম্পর্কে জানা আর মানা অনেক তফাৎ। কেউ অনেক মাসয়ালা - মাসয়ালা জেনেও আমল করে না। আসলে দ্বীনকে ভালোবাসতে হয়, দীর্ঘ প্রেক্টিস করতে হয়। আর ধৈর্যের গুণ আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ নিয়ামত। দ্বীন পালন করে মানে তো সম্পূর্ন নিস্পাপ নয়।

আসলে  আমি নিজেও পরিপূর্ণ দ্বীনদার হয়ে উঠতে পারিনি, নিজের ভেতরেও কাজ করে, দ্বীনদার ব্যক্তি গুনাহ করতে পারে না বা ভুল করতে পারে না! কিন্তু প্রিয় নবী (স:) ছাড়া কেউই নিস্পাপ নয়। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাওয়াটা জরুরি।

আমি কী থেকে কী ভাবতে লাগলাম। যাক শেষপর্যন্ত সুমু আমার সাথে দেখা করতে রাজি হলো। সাথে সুমাইয়ার ভাইকেও নিয়ে আসতে বলেছি, যাতে মহরাম সাথে থাকে।

জানি না তাকে কী বলবো?  কীভাবে বলবো। 

আজ শুক্রুবার, মনের মধ্যে এক অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করছে। সুমুর সাথে দেখা হওয়ার তাড়া! খুব ভোরেই রওয়ানা দিলাম; একটু তাড়াতাড়িই রেডি হয়ে নিয়েছি। মা'ও জিজ্ঞাস করলো, আজ এতো তাড়াতাড়ি কেন?

 নিজের মনকে বার বার অন্য কিছুতে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি! যাতে সুমাইয়ার খেয়াল মনে না আসে। কারণ ওর প্রতি আমার অন্যরকম দুর্বলতা! শয়তান যেটার সুযোগ নিবে! 

চলবে,,,,

শেষ বিকেলের আলো ২য় পর্ব Shesh Bikeler Alo । হেদায়েতের গল্প

 

শেষ বিকেলের আলো ২য়পর্ব Shesh Bikeler Alo । হেদায়েতের গল্প

গল্প: শেষ বিকেলের আলো

২য় পর্ব

লেখা: Nilofa Nilo( উম্মে জাবির)

সুমাইয়া সেদিনের পর থেকে চুপ হয়ে গিয়েছিলো। বাবা-মায়ের পছন্দ করা পাত্রের সাথেই সুমু বিয়েতে রাজী হয়ে যায়। স্বামীসহ সে দুবাইতে সেটেলড হয়ে যায়। শুনেছি সে সুখে আছে।

লুকিয়ে অনেক কান্না করেছি, খুব কষ্ট হয়েছিলো। কিন্তু আমি নিজেকে বুঝিয়েছি এতেই আমার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যান নিহিত রয়েছে।

 বাবার অন্যত্র বদলী হওয়ায়, ইন্টার পরীক্ষার পর আমরা এখান থেকে অন্য জায়গায় চলে যাই। ময়মনসিংহ মেডিকেলে চান্স পাওয়াতে একেবারেই দাদার বাড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। অনেকসময় মন আকুপাকু করতো সুমাইয়ার কেমন আছে জানার জন্য কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করেছি।  কারো কাছেই জিজ্ঞাস করিনি। হয়তো ভয় পেয়েছিলাম, যদি না আবার সুমুর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি, আরো বড় গুনাহে লিপ্ত হয়ে যাই!!

অনেক কষ্টে একটু একটু করে সুমুর কাছ থেকে দূরে সরে এসেছি।

একদিন আপুর কাছ থেকে জানতে পেরেছিলাম, সুমাইয়া স্বামীর সাথে ভালো নেই। একটু আগ্রহী হয়ে জানতে চেয়েছিলাম, কী হয়েছে? আপু বললেন,

সুমুর স্বামী মদ্যপায়ী, খারাপ লোক। রাত বিরাতে বউকে এসে পিটায়। 

এসব শুনে খুব কান্না করেছিলাম, বারান্দায় দাঁড়িয়ে, এক আকাশ ভরা জ্যোৎস্নাকে মনে হচ্ছিলো, আমার সাথে ব্যঙ্গ করছে। এই জ্যোৎস্নাই তো সুমু ভালোবাসতো। 

নিজের বিবেককে ন্যায়, অন্যায়, পাপ সম্পর্কে বুঝাতে পারি। কিন্তু মনকে তো বুঝাতে পারি না। মন তো বলে,

সুমু আজ যে কষ্টে আছে সব আমার কারণেই। যদি আমি সুমুকে একটু সাপোর্ট দিতাম হয়তো, আজ তার এই পরিণতি হতো না। সেও কোন মেডিকেলের স্টুডেন্ট হতো। হয়তো আমার সাথে জেদ করেই নিজের চেয়ে ১৫ বছরের বড় কাউকে বিয়ে করতে রাজী হয়েছিলো। জানি টাকা পয়সার প্রতি ওর লোভ কখনোই ছিলো না।

একসময় ওকে বলেছিলাম, আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না। যদি বাবা রাজি না হয়, প্রয়োজনে মরে যাবো, পালিয়ে যাবো তাও আমরা আলাদা হবো না।

দ্বীনের জ্ঞান আসার পর থেকে, বুঝতে পারলাম কতই না ভুলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি বুঝতে পারলাম,

"হয়তো আমার মনে হচ্ছে সুমুকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। কিন্তু যদি ওর সাথে আমার সুখ লেখা না থাকে, যদি ওর সাথে অকল্যান থাকে তবে বিয়ের পর ওর সাথে আমার সংসার করা বিষের মতো হবো, মনে হবে কেন যে প্রেম করে বিয়ে করলাম, ঝগড়া লেগে থাকবে, সুখের দেখা পাওয়া খুব কঠিন মনে হবে। কিন্তু আমি ওকেই চাই কখনো আল্লাহকে বলিনি।

যদি কারো সাথে প্রেম হয়ে থাকে দ্বীনের জ্ঞান আসার পর প্রথম দায়িত্ব হয়তো একে অপরকে বিয়ে করে নেওয়া। নয়তো কোন সম্পর্ক না রেখে আল্লাহর ফয়সার উপর ছেড়ে দেওয়া। আমি তাই করেছি।"

ধীরেধীরে দ্বীনকে আঁকড়ে ধরতে শিখে গিয়েছি, আল্লাহর কাছে চেয়েছি,

আল্লাহ যেন সুমুকে ভালো রাখেন। আর আমার মন থেকে সুমাইয়ার অস্তিত্বও ভুলিয়ে দেন এবং সুমাইয়ার মন থেকেও। তাই হলো, একটা সময় আসলো সুমাইয়াকে পুরোপুরি ভুলতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ। নিজের পড়ালেখা, কাজ নিয়ে এতই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি সুমাইয়া মনের কোণায় ভুল করেও উঁকি দেয়নি। 

"মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে।ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে।" 

[সুরা আন নূর ২৪ঃ৩০-৩১]

রাসুল (সঃ) বলেন, হে আলী ! তুমি হঠাৎ কোন মহিলার উপর দৃষ্টি পড়ার পর দ্বিতীয়বার ইচ্ছা করে তাকাবে না । কারন প্রথমবার অনিচ্ছাকৃত তাকানো তোমার জন্য মাফ হলেও দ্বিতীয়বার ইচ্ছাকৃত তাকানো মাফ নয় । 

[সুনান আবু দাউদ শরীফ-১/২৯২]

এমনকি এই কোরানের আয়াত আর হাদীসের উপর আমল করার কারণে কোন মেয়ের দিকে দৃষ্টিই দেওয়া হয় না আলহামদুলিল্লাহ। 

হয়তো সুমুও ভুলে গিয়েছে।

আমিতো আল্লাহর কাছে এটাই চেয়েছি। সুমুও আমাকে ভুলে যাক সুন্দর করে সংসার করুক।

বেশ কয়েকবছর কেটে গেলো, ডাক্তার হয়ে বের হলাম আলহামদুলিল্লাহ। একটি হাসাপাতালে আছি, পাশাপাশি প্রাইভেট প্রেকটিস করি এবং প্রতি শুক্রুবার আমার নিজের গ্রামে যাই। 

হঠাৎ এক শুক্রুবারে কালো বোরখা, নেকাব পরিহিতা এক রোগী আসলেন,

--আসসালামু আলাইকুম।

: ওয়ালাইকুম আসসালাম ওরাহমাতুল্লাহ

আমি একবার দেখেই চোখ নামিয়ে নিলাম।

খানিকটা অবাক হলাম, সুন্নত সম্পর্কে সচেতনতা দেখে। যেহেতু সালামের উত্তর বাড়িয়ে দিয়েছেন। সালামের উত্তর একটু বাড়িয়ে দেওয়া সুন্নত।

 এই এলাকায় এমন কাউকে তো চিনি না।

যাক আমার এসবের ভাবার কী দরকার!

--নাম? (প্রেস্ক্রিপশনে লিখার জন্য)

: বিনতে আবুল কাসেম!!

সালাম শুনেও আওয়াজ পরিচিত মনে হয়েছিলো, কিন্তু নাম শুনে এবং নাম দেওয়ার স্টাইল শুনে, আওয়াজটা আরো একবার শুনে চমকে উঠলাম! নীচের দিকে তাকিয়েই ভাবতে লাগলাম। মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন, অনেক কথা উঁকি দিচ্ছে।

সুমু ছিলো খুব আধুনিক মেয়ে, সে কীভাবে এতটা পর্দানশিন হয়ে গেলো!? সুন্নত সম্পর্কে এতটা সচেতনতা তার মধ্যে কখন আসলো! তাহলে কী সুমুও দ্বীনের পথে ফিরেছে? আলহামদুলিল্লাহ। অনেক বছর আগে শুনেছিলাম, সুমু ভালো নেই, তা ভুলে গেলাম!!

নিজের মনেই ভাবলাম তবে সুমু স্বামী নিয়ে বেশ ভালোই আছে। হৃদয়ের মণিকোঠায় একটু মন খারাপ ভাব আসলেও ঠোঁটের কোণায় এক প্রশান্তি হাসি এসেই মিলে গেলো।

অনেক কিছুই তার মুখ থেকে জানতে ইচ্ছে হলেও, নিজেকে শান্ত করলাম। কিছুই জিজ্ঞাস করলাম না। সব সমস্যা জেনে প্রেসক্রিপশন লিখে দিলাম।

যাওয়ার সময় বললো,

--কেমন আছি জিজ্ঞাস করারও প্রয়োজন মনে করলে না?

নীচের দিকে তাকিয়েই বললাম,

--ভালই তো আছ, আর কী জিজ্ঞাস করবো? তাছাড়া,,,,

সুমাইয়া আমাকে আর বলতে না দিয়ে, থামিয়ে দিয়েই চলে গেলো। বুক ছিঁড়ে এক দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে গেলো!

মাথা থেকে সব ঝেড়ে ফেলে দিয়ে, রোগী দেখাই মনযোগী হলাম।

সেদিন বাসায় এসে, মায়ের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে জানতে পারলাম,

সুমু দেশে এসেছে প্রায় এক মাস, সুমাইয়ার ডিভোর্স হয়েছে!! স্বামী রাত বিরাতে এসে মারতো, সারারাত মেয়ে মানুষ নিয়ে পড়ে থাকতো!! একদিন মারের এক পর্যায়ে সুমাইয়ার তিন মাসের প্রেগন্যান্সির মিসকারেজ হয়ে যায়। সেই যে সুমাইয়ার বাচ্চাটা নষ্ট হলো, সুমাইয়া আর মা হতে পারেনি। মেয়েটি পাগলের মতো হয়ে যায়। বাচ্চাটাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলো। কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা ভিন্ন ছিলো। যেটাকে আমরা নিজেদের জন্য ক্ষতির, কষ্টের মনে করি; আল্লাহর পরিকল্পনায় সেখানে হয়তো আমাদের জন্য ভালো কিছুই লেখা হয়। আলহামদুলিল্লাহ! 

চলবে,,,,,

শেষ বিকেলের আলো ১ম পর্ব Shesh Bikeler Alo । হেদায়েতের গল্প

 

শেষ বিকেলের আলো ১ম পর্ব Shesh Bikeler Alo । হেদায়েতের গল্প


গল্প: শেষ বিকেলের আলো

১ম পর্ব

লেখা: Nilofa Nilo(উম্মে জাবির)  হেদায়েতের গল্প। 

নিজে ডাক্তার হয়ে সমবয়সী এক ডিভোর্সি বা তালাকপ্রাপ্তা নারীকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা মোটেও সহজ ছিলো না!

পরিবারের বিরুদ্ধে, সমাজের বিরুদ্ধে এমনকি একপর্যায়ে এসে নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে সুমুকে বিয়ে করেছিলাম।

সুমাইয়া আমার চাচাতো বোন।  আমরা সহপাঠী এবং খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। এইরকম বন্ধুত্বে বেশিরভাগই প্রেম হয়ে যায়, অল্পবয়সী প্রেম!!

সুমু আর আমি একে অপরকে প্রচণ্ড ভালোবেসে ফেলেছিলাম। অবশ্য এটাকে কখনো ভালোবাসা বলা যাবে না, ভালোবাসার চেয়ে অল্পবয়সী আবেগই বেশী ছিলো। এইরকম ছেলে মেয়ে একসাথে পড়ার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমবয়সী প্রেমের সম্পর্ক ঘড়ে উঠে, যার শেষ পরিণতি অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিয়ে পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পারে না।

আমরা একই বাড়ির, একই ক্লাসের  হওয়াতে আমাদের তেমনভাবে কেউ সন্দেহ করেনি। সে খুব দুর্দান্ত, চঞ্চল, হাসিখুশি স্বভাবের। মিষ্টি করে হেসে দিলে প্রাণটা ভরে যেতো। সুমুর কিছু অদ্ভুদ বৈশিষ্ট্য ছিলো, হঠাৎ করেই বলতো,

--ইয়াসির চল্, জ্যোৎস্না দেখতে যাই।

 সুমু ঐসময় জ্যোৎস্না খুব পছন্দ করতো।

বৃষ্টির দিনে হুট করে ঘরে এসে বলতো,

--আরে কত পড়বি,  চল্ বৃষ্টি বিলাস করি।

ওর এই হুটহাট আবদার গুলো বেশ লাগতো। 

ওর মায়াবী চোখে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হতো।

খুব বেশি ফর্সা সে ছিলো না, কিন্তু অসম্ভব মায়াবী ছিলো। ওর জন্য আমাদের ক্লাসের, উপরের ক্লাসের সব ছেলেরাই পাগল ছিলো। কিন্তু সে ছিলো আমার জন্য পাগল।

ভাবতেই নিজেকে হিরো হিরো মনে হতো!

জীবিনানন্দ দাসের বনলতা সেন, এই যেনো আমারই বনলতা।

আমার ভালোবাসা!!

ঝর্ণার মতো চঞ্চল ছিলো সে!! সুমুর নূপুরের শব্দ আমাকে পাগল করে দিতো।

প্রেম কী জিনিস বুঝার আগেই ওর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।

ক্লাস টেন থেকেই আমাদের মধ্যে প্রেম শুরু হলেও, কলেজে উঠে একে অপরের বেশি ক্লোজ হওয়ার আগেই, একে অপরকে বেশি সময় দিতে পারার আগেই আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমি দ্বীনের পথে ফিরে আসি। 

আল্লাহর পক্ষ থেকে অমূল্য উপহার হেদায়তের বাণি পেয়ে যায় আলহামদুলিল্লাহ।

যখন থেকেই দ্বীনকে পরিপূর্ণ মানতে শুরু করেছি, বিয়ের আগে প্রেম গুনাহ, বিয়ের আগে গায়রে মহরাম নারীর সাথে সম্পর্কে জড়ানো গুনাহ জেনেছি; ঠিক তখন থেকেই সুমুকে এড়িয়ে চলতে শুরু করি। খুব কষ্ট হতো, খুব।

আমি গ্রামের পাশের কলেজে ভর্তি হই, আর সে মহিলা কলেজে।

এক সপ্তাহ ওর কাছ থেকে দূরে থাকলে, পরের সপ্তাহে আবার ওর সাথে একাকী দেখা করেছি, কথা বলেছি। নিজের নফসের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছিলাম। কখনো জয়ী হয়েছি, কখনো নফসকে দমন করতে পারিনি। ওর চোখের জল আমাকে বারাবার দুর্বল করে দিচ্ছিলো। নিজের কষ্টের চেয়ে সুমুর কষ্ট সহ্য করা আমার জন্য খুব বেশি কষ্টের ছিলো।

সে প্রতিনিয়ত আমাকে ভুল বুঝে যাচ্ছিলো, বারবার মেসেজ দিতো,

"কলেজে গিয়ে আমার চেয়ে সুন্দরী নতুন কাউকে পেয়েছিস, না? তাই আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছিস, আমার সাথে দেখা করিস না। তোর নতুন সঙ্গীকে নিয়ে ভালো থাকিস"

ওর এসব মেসেজ আমাকে ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছিলো প্রতিনিয়ত।

আমি নিজেকে কন্ট্রোল রাখার চেষ্টা করলেও, ওর মেসেজ পেয়ে পাগলের মতো হয়ে যাচ্ছিলাম। 

আমি ওকে কীভাবে বুঝায়, ওর সাথে এভাবে মিশা সম্ভব নয়। মিশতে পারি না। হ্যা আমিও সুমাইয়াকে প্রচণ্ড ভালোবাসি, কিন্তু আমার পক্ষে যেহেতু এখন বিয়ে করা সম্ভব নয়, এমনকি বিয়ের চিন্তা করাও সম্ভব নয় সুতরাং ওকে আমার এড়িয়ে চলাটাকেই উত্তম মনে করলাম। 

একদিন মেসেজ দিলো,

" ইয়াসির তুই কী আমার সাথে দেখা করবি? নয়তো আমি বিয়ের প্রস্তাবে রাজী হয়ে যাবো"

কিছুদিন আগে থেকেই সুমু মেসেজ দিয়ে যাচ্ছিলো, ওর বিয়ের কথা চলতেছে। 

যদি আমি ওর সাথে সম্পর্ক রাখি যে কোন ভাবেই সে বিয়ে আটকে দিবে। কিন্তু যদি না রাখি হয়তো সুমু বিয়েতে রাজী হয়ে যাবে, নয়তো নিজেকে শেষ করে দিবে!!

রাজি হলে তো, বিয়ে হয়ে যাবে ; সমস্যা নেই। কিছুদিন পর একে অপরকে ভুলে যাবো। 

কিন্তু যদি খারাপ কিছু করে ফেলে!! আমি খুব ভয় পেয়ে যাই।

আমি ওর সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিই।

সেদিন দুপুরে কলেজের পুকুরপাড়ে গিয়ে দেখি, সে বসে আছে। পিছনে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম। চুলগুলো এতই এলোমেলো, মনে হচ্ছে কতদিন চিরুনি লাগানো হয়নি। 

ওকে সুমাইয়া বলে ডাক দিতেই পিছনে ফিরে থাকালো। এক চোখ অভিমান চোখে, মেয়েটা কান্না করছিলো, বললো,

-- অহ এবার নামটাও ভুলে গেছিস? আগে সুমু ডাকতিস আর এখন,,,,

আমি চুপ করে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকলাম। আবার সেই বলা শুরু করলো,

--কাকে পেয়েছিস কলেজে? বল না? তোমার জীবনে কে এসেছে? তার মধ্যে এমন কি আছে যা আমার মধ্যে নেই। 

ইয়াসির কীভাবে ভুলে গেলে আমাদের সেই ওয়াদা, সেই স্বপ্ন।

কেন ভুলে গেলে?

বলে কান্নায় ভেঙে পড়লো।

লক্ষ্য করলাম, সুমু আগে আমাকে তুই বললেও এখন তুমি করে বলতে শুরু করেছে। 

 সেই মুহুর্তে নিজেকে ধরে রাখা খুব কষ্ট হচ্ছিলো।

কিন্তু আমি জানি, আজ যদি আমি নিজেকে স্ট্রং রাখতে না পারি, তবে আর কখনো পারবো না। নিজের নফসকে আর জয়ী হতে দিতে পারি না।

বললাম,

--বিয়েতে রাজী হয়ে যাও।

: আমাদের স্বপ্নের কী হবে?

আমি একটা চিঠি লিখে নিয়ে গিয়েছিলাম। চিঠিটা ওর হাতে দিয়ে বললাম, 

" বাড়িতে চলে যাও, বাড়িতে গিয়ে পড়িও"

সুমু,

আমি তোমাকে যখন ভালোবেসেছি, তখন আমি ইসলাম সম্পর্কে, আল্লাহর হুকুম - আহকাম সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। এমনকি এটাও জানতাম না। কোন মেয়ের সাথে এভাবে একাকী নির্জনে দেখা করা যাবে না। কারণ সেখানে তৃতীয় জন শয়তান থাকে। আমার জীবনে অন্য কোন মেয়ে আসেনি। কিন্তু বিয়ের আগে তোমাকেও আমার মনে জায়গা দিতে পারব না। হুম আমরা একে অপরকে ভালোবেসেছি, আমাদের জন্য এটাই মঙল হবে, যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে করে ফেলা, সেটা সম্ভব নয়। আমার বড় আরো দুই ভাই বোন পড়ালেখা করতেছে। 

আর একে অপরের থেকে দূরে সরে যাওয়া। নিজেদের দূরে রাখাটাই আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য মঙলের হবে।

দয়া করে আমাকে হেল্প করো, আমি যেন তোমার কাছ থেকে দূরে থাকতে পারি। 

সম্ভব হলে তুমিও দ্বীনকে বুঝার চেষ্টা করো। আশা করি আমাকে ভুল বুঝবে না।

দেখবে নিজেকে আরো কত ভালোভাবে জানতে পারবে।

নয়তো আমার মতই আল্লাহর কাছে দোয়া কর, আমি আল্লাহকে বলি,

"হে আল্লাহ সুমাইয়া যদি আমার দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য ভালো হয়, তবে ওকে আমার করে দিও। যদি ভালো না হয় তবে ওকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দাও।"

ভালো থেকো।

ইতি

ইয়ায়াসির

দূরে সরিয়ে দাও কথাটা বলতে খুব কষ্ট হতো। কিন্তু আল্লাহর ফায়সালাই আমার জন্য উত্তম হবে। সাথেসাথে একটু ভয়ও পেতে লাগলাম, সুমু খুব যিদ্দি,  কী না কি করে বসে। 

 In shaa Allah 

চলবে,,,

হুজুরের বউ -২ Bangla Islamic Story

হুজুরের বউ -২ Bangla Islamic Story

গল্প- হুজুরের বউ -২

(পর্বঃ-১)

লেখকঃ রাহিমা_নিশাত_নিঝুম


--------------------------------------------

-সিয়াম জানিস আজ কলেজে একটা নতুন মেয়ে এসেছে জানিস? 

-এই তোকে না বলছি আমাকে সিয়াম বলে ডাকবি না (সিয়াম)

-স্যরি দোস্ত!আর তোকে সিয়াম বলে ডাকব না (রনি)

-হুম এবার বল (সিয়াম)

-হুম মেয়েটা কেমন জানিস

-খুব সুন্দরী নিশ্চয় (সিয়াম)

-আমি কি দেখেছি নাকী (রনি)

-তাহলে যে বললি (সিয়াম)

-আরে মামা মেয়েটা তো আপাদ মস্তক ঢেকে এসেছিলো (রনি)

-বলিস কি?এতো জনপ্রিয় একটা পাবলিক ভার্সিটিতে পর্দা (সিয়াম)

-হুম সেটাই তো আশ্চর্যের বিষয় (রনি)

-মেয়েটাকে তো দেখতেই হয়, চল মামা দেখে আসি (সিয়াম)

০২.

-হ্যালো কালো বোরখা (শিষ বাজিয়ে নবাগতা মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে বলল সিয়াম)

মেয়েটা দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলো।

সিয়াম আর রনি মেয়েটার বিহেবে হা করে রইল।

আজ পর্যন্ত কেউ সিয়ামের সাথে এমন বিহেব করেনি, সিয়ামের মত হ্যান্ডসাম ছেলের পিছনে মেয়েরা আঠার মত লেগে থাকে আর মেয়েটা এমন করল???খুব রাগ হলো সিয়ামের

রনিকে বলল: মামা মেয়েটার খুব দেমাগ, একে বোঝাতেই হবে আমি সিয়াম কি জিনিস।

সিয়ামদের পাশ দিয়ে ফ্রাস্ট ইয়ারের নিহা যাচ্ছিলো

তাকে ডাক দিলো

সিয়াম: নিহা এই নতুন মেয়েটার সম্পর্কে কিছু জানো?

নিহা: মেয়েটা খুবই অদ্ভুদ, প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথেই কথা বলে না

সিয়াম: মেয়েটা দেখতে কেমন রে?

নিহা: কালো ভুত মনে হয়, তাইতো কারো সামনেই মুখ বের করেনা

সিয়াম: তোমাদের সামনেও মুখ খোলেনা?

নিহা: না ভাইয়া

সিয়াম: হুম তুমি যেতে পারো

রনি শোন

রনি: হুম বল

সিয়াম: সারা ভার্সিটিতে জানিয়ে দে সামনের টেস্ট exam টাইমে সবাই যেনো মুখ বের করে পরিক্ষার হলে প্রবেশ করে।

রনি: ওকে দোস্ত

রনি চলে গেলো, সিয়াম আনমনে বলে উঠল, এবার দেখব তুমি আপাদ মস্তক ডেকে আসো কি করে?????

০৩.

পরিক্ষা চলতেছে,,, সবাই যে যার আসনে বসে আছে

রনি আর সিয়াম হলে ডুকল, যেহেতু তারা কলেজের বড় ভাই তার উপর রাজনীতি ও করে,,,, তাই তাদের এসব পাওয়ার আছে।

একে একে সবার দিকেই তাকালো,,, হ্যা সবাই ঠিক আছে কিন্তু একি সেই মেয়েটা একি রকম ভাবে এসেছে

সিয়ামের কথা অমান্য করল, সিয়ামের রাগ দ্বিগুন বেরে গেলো

রেগে গিয়ে মেয়েটির কাছে গেলো

বলল: এই মেয়ে তোমার নাম কি

মেয়েটি কর্কশ কন্ঠে বলল: নুজাইফা জান্নাত

সিয়াম: তুমি কি আমাদের এনাউসমেন্ট শোনো নি

নুজাইফা: শোনেছি

সিয়াম: তাহলে মুখ খোল তারপর পরিক্ষা দাও

নুজাইফা: মেম কে ডাকুন মুখ খোলব

সিয়াম: তুমি পরিক্ষা দিতে পারবেনা

একথা শোনে নুজাইফা চলে গেল

সিয়াম বলল: তুমি কি জানো টেস্ট পরি ক্ষা না দিলে তুমি ফাইনাল পরিক্ষায় বসতে পারবেনা

নুজাইফা: আমার আল্লাহর আইনের থেকে পরিক্ষা বড় না

এই বলে নুজাইফা হল থেকে বের হয়ে গেলো

সিয়াম প্রিন্সিপালের কাছে বিচার দিলো নুজাইফা বেয়াদবি করেছে তার সাথে

যথারিতি নুজাইফাকে অফিস কক্ষে ডাকল প্রিন্সিপাল

-নুজাইফা তুমি জানো তুমি কি করেছো???? (প্রিন্সিপাল)

নুজাইফা: জ্বি সার আমি আমার আল্লাহর কোরআনের কথা মেনেছি, যাদের সাথে বিবাহ হালাল কাদের সামনে পর্দা করেছি

প্রিন্সিপাল: তুমিযে  পরিক্ষা দিকে পারবেনা এটা জানো তো?

চলবে,,,,,,

অশ্লীল গল্প, পর্নোগ্রাফি ভিডিও এসব দেখার আগে দয়া করে গল্পটি পড়ুন - Stay away from pornography
অশ্লীল গল্প, পর্নোগ্রাফি ভিডিও এসব দেখার আগে দয়া করে গল্পটি পড়ুন, bangla golpo, kharap kaj theke ture thakun, Stay away from pornography
Stay away from pornography

আসসালামু আলাইকুম

অশ্লীল গল্প, পর্নোগ্রাফি ভিডিও এসব দেখার আগে দয়া করে গল্পটি পড়ুন-

চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছেলেটি মোবাইলে কি যেনো একটা দেখছে! অন্ধকার গাঢ় আবছা, কানে ইয়ারফোন।

দেখছে যিনার দৃশ্য। স্বাদ নিচ্ছে তার চোখ। বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ছেলেটি দেখছে গোপনে নিকৃষ্ট দৃশ্যগুলি।

নিস্তব্ধ রাত ১১ টা বেজে কুড়ি মিনিট।
নেকেড দেখছে, বা অবৈধ কোনো নারীর সাথে যিনার আলাপ করছে নিভৃতে। কত স্বাদ গুনাহ করতে!

হঠাৎ - আচমকা শরীরটা ঝাকুনি দিয়ে উঠলো! ছেলেটির মনে হলো কে যেনো ঢুকেছে রুমে কিন্তু, রুমের দরজা তো আটকানো। কি ব্যাপার, কে ঢুকলো রুমে অন্ধকারে?
হঠাৎ শরীরটা শিউরে উঠলো।অজানা কেমন একটা শব্দ কানে বাজলো। অনুভব করতে পারলো, কেনো জানি শরীরটা অবস হয়ে যাচ্ছে!

- হঠাৎ বা দিকে দেখলো এটা কি?
- ওমাহ কে এটা? বিশাল বড় কে? আমার পাশে দাড়িয়ে আছে। কিভাবে ঢুকলো রুমে, হায় মাবুদ এ কেমন ভয়ানক মূর্তি দাড়িয়ে আছে আমার সামনে। থর থর করে কাপছে শরীর, হাত থেকে বুকের উপর পড়লো মোবাইলটা।

পর্নোগ্রাফি চলছে পুরোদমে। মোবাইলটা বুকের উপর থেকে পিছলে ছেলেটির গায়ের পাশে গিয়ে পড়লো,কিন্তু চলছে উলঙ্গ নারী - পুরুষের যিনার ভিডিও।

হয়তো মৃত্যুর ডাক পড়ে গেলো তার।
- সে দেখছে মালাকুল মউতকে
দাড়িয়ে আছে মৃত্যু দূত।

একটু আগেও দেহটা ছিলো অনেক গরম, কিন্তু মুহূর্তেই ঝিম মেরে ঠান্ডা হয়ে গেছে। মৃত্যু আজ তার সামনে, মনে মনে ভাবছে হায় আপসোস! একটু যদি তওবা করতে পারতাম! কিন্তু সময় যে আর নেই।

ছেলেটি পাপ ছাড়তে পারেনি এর আগেই ডাক পড়ে গেছে মৃত্যুর। সময় ও পাইনি তওবা করতে। মোবাইলে ছিলো অগনিত উলঙ্গ ভিডিও ছিলো কত রঙ, বেরঙের সুরেলা গান। ডিলিট ও করতে পারেনি তার আগেই মৃত্যু হাজির।

- মৃত্যু ডাকছে তাকে, আসো হে নাপাক আত্মা!
- আসো হে নাপাক জালিম! নফসের উপর অত্যাচারী রুহু।

ভয়ে রুহু দৌড়াদৌড়ি শুরু করলো দেহের আনাচে কানাচে। পা দুটি হিম ঠান্ডা হতে শুরু করলো। কেউ নেই পাশে চোখ উল্টিয়ে ভয়ে, গলাটাও শুকিয়ে গেছে। পাশেই পড়ে আছে নেকেডের মোবাইলটা।

হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে বসে হুম! কেউতো নেই, মৃত্যু দূত চলে গেছে আমাকে সুযোগ দিয়ে।

দুনিয়ায় মানুষ যে অন্তর ভেঙে দেয়, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সেই অন্তর ভালোবাসার প্রলেপে জোড়া লাগিয়ে দেয়।

একদিন হুট করেই মৃত্যু চলে আসবে। আমাকে অপ্রস্তুত দেখে মালাকুল মউত কখনোই ফিরে যাবে না। আমাকে আরেকটি বার শুধরে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। পরকালের পাথেয় ছাড়াই যখন জীবন।

(বি:দ্র - এটি একটি কল্প কাহিনি)
Islamic Love Story দ্বীনদার স্বামী স্ত্রীর ইসলামিক ভালোবাসার গল্প
দ্বীনদার স্বামী স্ত্রীর আল্লাহ তাআলার কাছে দোআ, Islamic Love Story দ্বীনদার স্বামী স্ত্রীর ইসলামিক ভালোবাসার গল্প, Islamic valobashar golpo

Islamic Love Story, ইসলামিক ভালোবাসার গল্প, ভালোবাসার গল্প, islamic golpo, islamic valobasar golpo, দ্বীনদার স্বামী স্ত্রীর ইসলামিক ভালোবাসার গল্প
ইসলামিক ভালোবাসার গল্প


দ্বীনদার স্বামী স্ত্রীর আল্লাহ তাআলার কাছে দোআ 🤲🤲🤲🤲👇👇👇👇

ফজরের আযান হচ্ছে।
স্ত্রীঃ এই উঠো, আযান হচ্ছে। মসজিদে যাবে উঠো।

স্বামীঃ হু আরেক টু ঘুমাই না।

স্ত্রীঃ হ্যা ঘুমাও তুমি আরাম করে,
আর আমি যাচ্ছি পানি আনতে
তোমার মুখে ঢালবো।

স্বামীঃ আরে আরে এই দেখো,
আমি উঠেগিয়েছি।

স্ত্রী মুচকি হেসে, সালাম দিলেন।
স্বামীকে অতঃপর জানতে চাইলেন

স্ত্রীঃ ঘুম কেমন হলো ?

স্বামীঃ হুম সেরকম দারুন ঘুম হয়েছে।
স্বপ্নও দেখেছি একটা।

স্ত্রীঃ ইশ তাই বুঝি! কি দেখলে ?

স্বামীঃ দেখেছি হাফ ডজন
পিচ্ছি বাচ্চা আমাকে আব্বু আব্বু আর„
তোমাকে আম্মু আম্মু বলে চিৎকার করে ডাকছে।

স্ত্রীঃ উঁহু .. হয়েছে অনেক দুষ্টামি।
এখন উঠো জলদি।

স্বামীঃ ইশ দেখো কিভাবে ভাগিয়ে দেয়।

স্ত্রীঃ ভাগবে নাকি পা ধরে টেনে ফেলে দিবো নিচে?

স্বামীঃ দেখো পাগলী রেগে গেছে।
এই নেও উঠে গেলাম।

স্বামী ওযু করে এসে রেডি হয়ে„
নামাজের উদ্দেশে বের হচ্ছিলেন।
স্ত্রী দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন।

স্বামীঃ তুমি অনেক ভালো একটা বউ সেটা জানো"?

স্ত্রীঃ হু হয়েছে দেরী হয়ে যাচ্ছে।

স্বামীঃ এভাবে রোজ
বকা ঝকা করে আমাকে নামাজে পাঠিও কেমন ?

স্ত্রীঃ তারপরেও নিজ থেকে উঠে যাবেনা তাইনা ?

স্বামীঃ সকাল সকাল তোমার ডাকে ঘুম
ভাঙবে তারপর তোমার তাড়া খেয়ে নামাজ
পড়তে যাবো। আর এর জন্য
আমি কখনও নিজ থেকে উঠবো না।

স্ত্রীঃ তোমাকে নামাজের জন্য
রেডি করে পাঠাতে আমার
অনেক ভাল লাগে।

স্বামীঃ এই জন্যই আমি তোমাকে এত ভালবাসি।

স্ত্রীঃ দেরী হচ্ছে কিন্তু জলদি যাও।
আমি চা রেডি করি।

স্বামীঃ আল্লাহ্ হাফেজ

স্ত্রীঃ ফি আমানিল্লাহ।

স্বামী মুচকি হাসি দিয়ে নামাজের উদ্দেশে অন্ধকার পথ বেঁয়ে হেঁটে যায় আর মনে মনে বলে,
"হে আল্লাহ্ কোন ভাবেই আমি তোমার শোকর আদায় করে শেষ করতে পারবোনা। কিসের বিনিময়ে আমাকে এমন জীবন সঙ্গিনী দিয়েছো আমি তাও জানিনা।"

দরজা আটকিয়ে স্ত্রী জায়নামাজে বসে
মুনাজাত শুরু করে,
"হে আল্লাহ্ এই মানুষটার সাথেই যেন
জীবনের শেষ মুহূর্ত টা কাটে
আর আখেরাতের শুরুটাও যেনো হয়
এই মানুষটার হাত ধরে।"

প্রতিটি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কই যেন এমন মধুময় ও রোমান্টিক হয়-... আমিন।

           ❤ফি আমানিল্লাহ্❤